মনোভাবের উপাদান
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক গন, আশা করছি আপনারা সকলে অনেক ভাল আছেন। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে মনোভাবের উপাদান নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
আপনারা যারা মনোভাবের উপাদান সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক তাহলে অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। তাহলে চলুন মনোভাবের উপাদান সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
প্রশ্নঃ
মনোভাবের উপাদান।
মনোভাবের উপাদান গুলো কি কি?
মনোভাবের উপাদান গুলো তুলে ধর।
মনোভাবের কয়টি উপাদান সংক্ষেপে আলোচনা কর।
ভূমিকাঃ
সমাজবিজ্ঞানে মনোভাব প্রত্যয় টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা ব্যক্তির আচরণে সামঞ্জস্য ও গতিশীলতা নিয়ে আসে। প্রত্যেক ব্যক্তিই তার আশেপাশের মানুষ এবং পরিবেশের বিভিন্ন বিষয় বা বস্তুর প্রতি একটি বিশেষ মনোভাব থাকে, যা ব্যক্তির চালচলন, কথাবাত্রা এবং কর্মের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়। একজন ব্যক্তি যখন বলে আমি গণতন্ত্রের বিশ্বাসী তখন গণতন্ত্র সম্পর্কে তার যেমন ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ পায়, একইভাবে যখন বলে আমি ঘুষখোর কে ঘৃণা করি তখন ঘুষ গ্রহণকারীর প্রতি উল্লেখিত ব্যক্তির নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ পায়। পরিবেশের বিভিন্ন ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে সামাজিকীকরণের সাথে সাথে মানুষের মধ্যে নানা প্রকার মনোভাব গড়ে ওঠে। এসব মনোভাব ব্যক্তির জীবনের বিভিন্ন দিককে নানাভাবে প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত করে থাকে।
আরো পড়ুনঃ সমাজকর্ম কাকে বলে
মনোভাবের উপাদানঃ
মনোভাবের মধ্যে তিনটি উপাদান রয়েছে। সেই তিনটি উপাদান সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো। তাহলে চলুন তিনটি মনোভাব সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- অবহিতিমূলক উপাদান।
- অনুভূতিমূলক উপাদান।
- আচরণমূলক উপাদান।
১। অবহিতিমূলক উপাদানঃ
মনোভাব বিষয় সম্পর্কিত ব্যক্তির ধারণা ও বিশ্বাসই হলো অবহিতিমূলক উপাদান। এর সাথে জড়িত বা সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়াগুলো হচ্ছে, অনুকূল কিংবা প্রতিকূল কাঙ্খিত বা অনাকাঙ্ক্ষিত ভালো বা মন্দ প্রভৃতি। কোন দেশের সরকার ও শাসন ব্যবস্থা সম্বন্ধে কোন ব্যক্তির মনোভাব কেমন হবে তা নির্ভর করে সরকার ও শাসন ব্যবস্থার সম্পর্কে ওই ব্যক্তির অবহিতি বা জ্ঞানের উপর। এসব জ্ঞান বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েই ওই রাষ্ট্রটি সম্বন্ধে ব্যক্তির অনুকূল বা প্রতিকূল মনোভাব গড়ে ওঠে।
২। অনুভূতিমূলক উপাদানঃ
মনোভাব টির সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তির আবেগ ও ভাব প্রবণতাকেই অনুভূতিমূলক উপাদান বলা হয়। যেমন কোন কর্মচারীর প্রতি একজন মালিকের অনুকূল বা ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে। ওই কর্মচারীর প্রতি মালিকের পছন্দ বা ভালোলাগা আবেগের উপরে ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।
আরো পড়ুনঃ সাইকো থেরাপি কি
৩। আচরণমূলক উপাদানঃ
ব্যক্তির সকল প্রকার পুনর্বিন্যস্ত কর্মপ্রবণতায় মনোভাবের আচরণমূলক উপাদান। যেমন কোন ছাত্রের পড়াশোনার প্রতি মনোভাব নেতিবাচক হলে সে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের পাঠদান সম্পর্কে অমনোযোগী হওয়া শ্রেণিকক্ষে কথাবার্তা চালানো কিংবা হোমওয়ার্ক জমা না দিয়ে সর্ব তমভাবে ক্লাস বন্ধের জন্য কামনা করে। আবার কোন বিষয় সম্পর্কে কোন ব্যক্তির মনোভাব ইতিবাচক হলে সে তার মঙ্গল কামনা করে। বলা যায় যে, মনোভাব হল কোন বিশেষ ব্যক্তি বস্তু বিষয় বা পরিস্থিতির প্রতি অনুকূল বা প্রতিকূল প্রক্রিয়ার স্নায়বিক ও মানসিক প্রস্তুতি যার মধ্যে অবহিতি অনুভূতি ও আচরণমূলক উপাদানের সমন্বয়ে ঘটেছে।
উপসংহারঃ
উপরিক্ত আলোচনায় বলা যায় যে, মনোভাব পরিমাপের জন্য অনেকগুলো স্কেল প্রচলিত থাকলেও উপযুক্ত মনোভাব গুলোর ব্যবহারই সর্বাধিক পরিলক্ষিত হয়। প্রতিটি মানব ভিন্ন পদ্ধতিতে গঠিত হলেও একটি বিষয়ে এদের মিল রয়েছে। আর তা হলো প্রত্যেকটি মানব কে কোনো বিশেষ বস্তু বা বিষয় সম্পর্কে ইতিবাচক নেতিবাচক মনোভাবগত অবস্থানকে সংখ্যার সাহায্যে প্রকাশ করা হয়।
আরো পড়ুনঃ দল সমাজকর্ম কি
আমাদের শেষ কথা,
মনোভাবের উপাদান সম্পর্কে আশা করছি আপনারা সকলে পরিপূর্ণ বিষয় ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এবং পরিচিতজনদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। সকলে ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।
এম আর টেক ইনফো ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url