সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি - সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি আলোচনা কর

পরিসংখ্যান বলতে কি বুঝ - পরিসংখ্যান কাকে বলে

সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি-সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি আলোচনা কর-সামাজিক সমস্যার ধাপগুলো আলোচনা কর-সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি সমূহ লিখ। প্রিয় পাঠকগণ আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। আপনাদের মধ্যে যারা সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি নিয়ে বিস্তারিতভাবে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেল একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। তাহলে চলুন সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

অপূর্ণতা হচ্ছে মানব সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য বৈশিষ্ট্য। সামাজিক বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় সমস্যা। বিচিত্র এ মানব জীবন। জীবনের এ বৈচিত্র্যর মাঝে অনেক অবাঞ্ছিত ঘটনা প্রতিবন্ধকতা এবং নৈরাজ্য মানুষের স্বাভাবিক চলার গতিধারাকে ব্যাহত করে। সুষ্ঠু স্বাভাবিক উন্নয়নের পথ রুদ্ধ করে, যা সমাজ রাষ্ট্র তথা ব্যক্তি জীবনকে ইস্পিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাধার সৃষ্টি করে। এ প্রেক্ষিতে সমাজের অধিকাংশ মানুষ এর সংশোধন ও নিরাসনের ইচ্ছা পোষণ করে। তখনই অনুরূপ অসুবিধা কে সামাজিক সমস্যা হিসেবে গণ্য করা হয়।

সামাজিক সমস্যার গতিপ্রকৃতি ব্যাপক বিস্তৃত এবং বিচিত্র। বিভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে সামাজিক সমস্যার উদ্ভব হয় এবং সামাজিক এসব সমস্যার আবর্তে মানুষ জর্জরিত। সামাজিক বিজ্ঞান হিসেবে সমাজকর্ম সামাজিক সমস্যার গতিপ্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য আলোচনা এবং সমস্যা দূরীকরণের লক্ষ্যে কাজ করে। সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা নিচে বিস্তারিতভাবে করা হলো। তাহলে চলুন সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

১। ক্ষুদ্র ও বৃহৎ সমাজঃ সামাজিক সমস্যা সর্বদাই সমস্যা। এটি যেমন ক্ষুদ্র সমাজে বিরাজ করে তেমনি বৃহৎ সমাজেও বিরাজ করতে পারে। সামাজিক বিজ্ঞানে কোন বিষয়ে পুরোপুরি মাত্রায় সফলতা পাওয়া যায় না। এখানে কোন প্রোপঞ্চ ৭০ প্রায় কাছাকাছি। ঠিক একই ভাবে বলা যায়, পৃথিবীর প্রতিটি সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। কোনো সমাজেই পুরোপুরি ভাবে সমস্যা মুক্ত নয়।

২। সামাজিক প্রক্রিয়া নির্ভরঃ প্রতিটি সামাজিক সমস্যায় সামাজিক প্রক্রিয়া নির্ভর। অর্থাৎ সমাজে বিদ্যমান আচার সংস্কৃতি ধর্ম পরিবার আইন প্রকৃতি থেকেই সামাজিক সমস্যার উদ্ভব হয়।

৩। অর্থনীতিঃ সামাজিক সমস্যা অর্থনীতিকে খুব বেশি মাত্রায় সংশ্লিষ্ট করে। যেকোনো ধরনের সামাজিক সমস্যা মানুষের অর্থনীতিকেই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই সামাজিক সমস্যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক।

৪। মনস্তাত্ত্বিকঃ সামাজিক সমস্যা মানুষের অর্থনীতিকে বিপদগ্রস্থ করা ছাড়াও মানসিক পীড়ন এর একটি অন্যতম দিক। যেকোনো সামাজিক সমস্যা মানুষের মানসিক নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিতে পরিণত হয়। ইউরোপ আমেরিকার নেই উন্নত দেশে মানুষের অর্থনীতি ও শিক্ষাগত দিক দিয়ে উন্নতি লাভ করলেও সেখানে আত্মহত্যার হার অনেক বেশি। এর কারণ হিসেবে মানুষের মানসিক নিরাপত্তাহীনতাকেই দায়ী করা যায়।

৫। বিবর্তন মূলকঃ সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সমস্যা বিরাজ করে। সমাজ বিকাশের ভিন্ন ভিন্ন ধারায় সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি ভিন্ন ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন সমস্ত সমাজের সমস্যা এবং আধুনিক পুঁজিবাদী সমাজের সমস্যা একই রকম হতে পারে না।

৬। সামাজিক মূল্যবোধ সংশ্লিষ্টঃ সামাজিক সমস্যা অবশ্যই সামাজিক মূল্যবোধের সাথে সংশ্লিষ্ট। যেকোনো ধরনের সামাজিক মূল্যবোধের অভাব হেতু সামাজিক সমস্যার বিকাশ লাভ ঘটে।

৭। শিল্পায়ন ও নগরায়নঃ শিল্পায়ন ও নগরায়ন সমাজে প্রকৃতিগতভাবে সামাজিক সমস্যা বেশি মাত্রায় উদ্ভূত। শিল্প ও নগর সমাজে মানুষের ভিন্নমুখী পেশা ও চাহিদার ফলশ্রুতিতে সামাজিক সমস্যার প্রকট আকার ধারণ করে।

উপরের আলোচনার পরিশেষে বলা যায় যে, সামাজিক সমস্যা এক মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি যা সমাজদেহের অধিকাংশ সদস্যকে প্রভাবিত করে। মূলত সমাজ সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকেই সামাজিক সমস্যা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক স্তরে সামাজিক কাঠামো সহজ ও একমুখী থাকায় সমস্যাও ছিল সহজ সরল ও একমুখী। কিন্তু কালক্রমে শিল্প বিপ্লব সহ বিভিন্ন কারণে সামাজিক কাঠামো জটিলতার রোগ নেয়ায় সামাজিক সমস্যাতেও আসে নানা জটিলতা ও যোগ হয় নতুন প্রকৃতি।

সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি - সামাজিক সমস্যার প্রকৃতি আলোচনা কর এ বিষয় সম্পর্কে আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা পরিষ্কার ভাবে পরিপূর্ণ বিষয় বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আজকের এই আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এবং পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। তাহলে সকলে ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন এবং এতক্ষণ ধরে আমাদের পাশে থাকার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।